বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২, ঢাকা– বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেট্রোনেট বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ আলমাস কবীর। সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, আইসিটি ডিভিশন্সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি বেসরকারি সেক্টর থেকে এফবিসিসিআই, বিজেএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, লেদারগুডস অ্যাসোসিয়েশন ও ট্যানারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা যোগদান করেন।
স্বাগত বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অটোমেশনের মতো নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে শিল্প ও প্রযুক্তির অভূতপূর্ব পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, মানুষের কাজ দখল করে নেবে উন্নত মানের মেশিন ও রোবট, ফলে অনেক লোক তাদের কর্মসংস্থান হারাবে। পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিও হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য এই কর্মশালার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক এফবিসিসিআই পরিচালক, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বারের সভাপতি এবং মেট্রোনেট বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রভাবে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে ৬০ শতাংশ, আসবাবপত্র শিল্পে ৫৫ শতাংশ, প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য শিল্পে ৪০ শতাংশ, চামড়া ও জুতা শিল্পে ৩৫ শতাংশ এবং সেবা শিল্পে ২০ শতাংশ লোক কর্মহীন হয়ে পড়বে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিরাই টিকে থাকবে। উল্লেখ্য, আমাদের দেশে কারিগরি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ জনবল মাত্র ১৪ শতাংশ; কিন্তু উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যায়, কারিগরিভাবে দক্ষ জনগোষ্ঠী প্রায় ৬০ শতাংশ। তাই আমাদের এখন থেকেই একটি সুপরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশে কারিগরি দিক থেকে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে। তিনি তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, প্রযুক্তিগত সমস্যায় উৎপাদনে ব্যাঘাত সৃষ্টি, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করা, ইন্টারনেট ও অন্যান্য প্রযুক্তির মধ্যে অব্যাহত সংযোগ নিশ্চিত করা, অটোমেশনের কারণে বহু মানুষের কাজের সুযোগ হ্রাস পাওয়াকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেন। অটোমেশনের প্রভাবে কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি হ্রাস, উৎপাদন শিল্পে নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে বড় পরিবর্তন, বিশেষায়িত পেশার চাহিদা বৃদ্ধি ও সামগ্রিক জীবনযাত্রার মানোন্নয়নকে এই সম্ভাবনা হিসেবে চিহ্নিত করেন। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনেক অগ্রগতি করছে। বর্তমান বিশ্বের আধুনিক সব তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী দিনের প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ।বাংলাদেশে আমাদের প্রস্তুতি হিসেবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সংশ্লিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সমাপনী বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডব্লিউটিও অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব-সম্পর্কিত গবেষণা ও উদ্ভাবনকে অগ্রাধিকার দিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে একটি প্রতিযোগিতামূলক, উদ্ভাবনী ও দক্ষ দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার পরিকল্পনা থেকেই এমন কর্মশালার আয়োজন। তিনি এমন ইন্টারক্টিভ প্রেজেন্টেশনের জন্য মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক সৈয়দ আলমাস কবীরকে ধন্যবাদ জানান।
- “The Wolf of Wall Street: A Cautionary Tale of Excess and Greed” - March 3, 2023
- Hola gives the people of Bangladesh free access to a world of online content with the launch of its Hola Browser - January 27, 2023
- Don’t stop cultivating cash crops but increase production in unutilized lands: PM - January 13, 2023